রঙিন সুতায় ছিট ফেলে এক প্রজাপতি ধরতে গিয়ে
উলটে পড়ে এই উঠোনে
মা গো তোমার খুন হয়েছে
বিশ বছরের যুবক ছেলে
মাগো তোমার বিশ বছরের যুবক ছেলের শবের উপর
আসর করে নীল জোনাকী গানের পাখি
হলুদ বিকেল।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা কবিতা, ১৯৬৯ সালে লেখা। শব্দগুলো এদিক ওদিক হতে পারে। পড়েছিলাম, ১৯৯৯ সালে, হুমায়ূনের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে শৈলীর বিশেষ সংখ্যায়।
আজ এই মুহূর্তে কিছু বিক্ষিপ্ত অনুভূতি-
কেবলই
মনে পড়ছে 'অচিন বৃক্ষ' পড়তে পড়তে পায়ে হেঁটে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা, কোনো
এক বৃষ্টির বিকেলে আধো-অন্ধকার ঘরে 'ভূত'- জ্বিন কফিলের গল্প পড়া, কলেজ
জীবনের শুরুতে ঢাকার একাকী জীবনে 'জয় জয়ন্তী' পড়ে বিষন্ন হওয়া, আরও পরে
'একটি নীল বোতাম' গল্প পড়ে মাথায় ঘোর লাগা নিয়ে চায়ের দোকানে বসে থাকা। মনে
পড়ছে, বাকের ভাইয়ের মৃত্যুর পর জেল গেইটে মোনার অপেক্ষার দৃশ্য দেখে চোখ
ভিজে ওঠার স্মৃতি। আলমাস সিনেমা হলে 'শঙ্খনীল কারাগার'। বহুব্রীহি'র - 'তুই
রাজাকার'। নিন্দা-ক্ষোভগুলো আজ উহ্য থাক...।
প্রথম বই পড়েছিলাম, 'তোমাকে'। নিজের টাকায় প্রথম হুমায়ূনের বই কিনেছিলাম - মজার ভূত।
ক্লাস টেন পর্যন্ত হুমায়ূনের ৪৯টা উপন্যাস পড়েছিলাম। ইচ্ছা ছিল, ৫০তম বইটা তার লেখা ইংরেজী একটা উপন্যাস পড়ব। পড়া হয়নি, এক বছর বিরতিতে পড়েছিলাম, 'জয় জয়ন্তী'। মেঘের পরে মেঘ।
হুমায়ূনের যে বই পড়ে প্রথম বিরক্ত হই - 'রূপার পালঙ্ক'। আশাভঙ্গ হয়েছিল, জোছনা ও জননীর গল্প পড়ে।
বিরক্ত হয়েছিলাম, কন্যাসম শাওনকে বিয়ের সংবাদ শুনে।
ক্ষোভ জানিয়েছিলাম 'দেয়াল' উপন্যাসের ২ অধ্যায় পড়ে।
গতকাল পর্যন্তও মনে হতো - হুমায়ূন কেবলই জনপ্রিয়তা প্রত্যাশী।
কিন্তু, হুমায়ূন-পাঠ-স্মৃতি উল্টেপাল্টে দেখি, লোকটা অসম্ভব প্রভাবশালী ছিলো, মন ছোঁয়ার প্রতিপত্তি, ক্ষমতা।
আজ বিকেলে হঠাৎ মনে হলো - শুধু কি হুমায়ূন আহমেদই বিদায় নিলেন? নাকি বিদায় নিলো - হিমু, মিসির আলি, শুভ্র, আনিস, তিতলী, মবিন, রূপা আর অন্যান্যরা!
গুডবাই, ম্যাজিশিয়ান!!!
Read more...