07 May, 2008

অবশেষে মঈণ - মিলা

-
হাসানের সাথে আজ আবার অনেকদিন পরে জি-টকে কথা হয়। শুরুতেই আমরা দুই দোস্ত মন খারাপ করি এই ভেবে যে, যাযাদি থেকে মি. রেহমান পদত্যাগ করেছে, গতকাল এক লেখায় গুডবাই-বিদায় বলে গেছে।

ব্যাপারটি এমন নয় যে, মি. রেহমানের লেখার আমরা বড় ফ্যান, এমনও নয় যে – দিনের পর দিনের জন্য আমরা অপেক্ষা করতাম, তবে এটা নিশ্চিত – হাতের কাছে পেলে শুরুতেই একেবারে শেষ প্যারায় বলা গল্পটা পড়ে ফেলতাম। তারপরে প্রেমলীলা। রেহমানের কাছে আমরা এ জন্য ঋণী; ঐসব গল্প বন্ধুদের আড্ডায় বলে আমরা বাহবা কুড়াতাম।

আমাদের মধ্য কৈশোরে যায়যায়বিদ্যুৎ সংখ্যা এবং আরো পরে ক্যামেরা বা শাড়ী সংখ্যা আমরা অতি গোপনে পড়তাম, একটু বড় হয়ে গেছি ভাবতাম মনে মনে।

দৈনিক হওয়ার আগে মি. রেহমান বলেছিলেন – দৈনিক যাযাদি’র কাজ হবে মানুষকে প্রাপ্তমনষ্ক করা। হ্যাঁ, আমরা প্রাপ্ত মনষ্ক হয়েছি – দেখেছি কীভাবে মেটামরফসিস হয়, রঙ-চঙা শার্ট পড়ে একদা আপোষহীন সম্পাদক কীভাবে ট্রেন্ডি জুলফি নিয়ে লাল গুলাপী হয়। মাথা ঝুঁকিয়ে বলে, এবার একটি – ম্যুভি ক্লিপ। এরপর খালি ম্যুভি ক্লিপ। পতনের তোড়ে এয়ারপোর্টে বিব্রতকর মুহুর্তগুলো বাংলা ইংরেজী তর্জমায় ছাপা হয়। সেটাও ম্যুভি ক্লিপ হয়ে যায়।

আজ আমি আর হাসান এসব আলাপ করি।
মঈণ-মিলার ফোনালাপ অথবা পরকীয়ার পরিণতি কী হবে সেটা নিয়ে ভাবি। তবে এতোদিনের ফোন বিল কতো এসেছিল, কতোটুকু বিল শোধ করা হয়েছিল সে জল্পনা কল্পনা করি। মি. রেহমান অন্য কোন পত্রিকায় মঈন মিলাকে ডিজুস কানেকশন সেট করে দিবেন বলেও ধারণা করি। কারণ, দেশের পোলাপাইনকে প্রেম পরীক্ষা অথবা জীবন জিজ্ঞাসার গাইড হিসাবে ঐ বিশেষ সংখ্যাগুলোর বিকল্প নেই। (ব্লগে এক মন্তব্যে বিখ্যাত ধুসর গোধুলীও এ ঋণ স্বীকার করেছেন)।

মঈণ-মিলাকে আমরা কতোদিন মিস করবো – আপাততঃ সেটা না জানলেও আজ হাসানের বলা গল্পটা এখানে বলে যাইঃ

“অনেকদিন পরে ফোনালাপের ক্লান্তি পেরিয়ে মঈন-মিলা লাভ রোডের অফিসে দেখা করে। একে অন্যের দিকে তাকায়।
কতোদিন পরে দেখা।
‘চোখ দুটো গেছে ক্ষয়ে গাল দুটো গেছে ঝুলে নিয়মিত অবহেলায়।‘
তবে মিলা অবহেলা করে না, ফৃজ থেকে শ্যাম্পেন নিয়ে এগিয়ে দেয়।
মঈন হাত নাড়ে, বলে – ‘নাহ, ওসব ছেড়ে দিয়েছি’।
মিলা অবাক, ‘কীভাবে’?
‘পাওয়ার অব উইল।‘ মঈণ চোখ উলটে জবাব দেয়।
এবার মিলা বলে, ‘তাহলে চলো – ড্রাইভে যাই। তোমার প্রিয় আশুলিয়া।‘
মঈণ এবারো হতাশ করে, বলে – ‘লং ড্রাইভে যাই না।‘
মিলা জিজ্ঞেস করে, ‘কী বলো, তোমার মতো ড্রাইভিং পৃয় মানুষ, কীভাবে ছাড়লে?’
মঈণ আগের মতোই বলে – ‘পাওয়ার অব উইল’।
মিলা হতাশ হয়। দেখে পুরনো সে-ই মঈণ আর নেই। ক্যামন যেন বদলে গেছে।
অনেক ভেবে চিন্তে মিলা এদিক ওদিক দেখে। কুক জন নেই। কোণায় লিভিং রূম সাজানো গুছানো। মিলা সেদিকে ইশারা করে - ইংগিতে বলে, ‘লেটস গো’।
মঈণ এবার মাথায় ঝোকায়।
মিলা জিজ্ঞেস করে – ‘সে কী! এটা ছাড়লে কী করে? এটাও পাওয়ার অব উইল?’
মঈণ জুলফিতে আঙুল বুলায়। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘নাহ, দ্যাটস ফেইল্যুর অব অ্যাবসল্যুট পাওয়ার।‘

-

Read more...

  © Blogger templates The Professional Template by Ourblogtemplates.com 2008

Back to TOP