24 March, 2007

স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্ক

মীমাংসিত বিষয় নিয়ে 'বিতর্ক' হয় কী-না সেটা এক বিরাট প্রশ্ন। তবুও কিছু কিছু বিষয়ে 'বিতর্ক' জিঁইয়ে রাখা হয়। পেছনে থাকে স্বার্থের সুনিঁপুন ছলা। তেমনি একটি বিষয় - বাংলাদেশের 'স্বাধীনতার ঘোষক' বিতর্ক। মসনদ দখলের জন্য আরোপিত এ চেষ্টা দেশের ইতিহাস বিকৃতির একটি অংশ মাত্র। এভাবেই হয়তো নতুন নতুন বিষয় আসবে সামনের দিনগুলোয়। নতুন প্রজন্মের কাছে ঝাপসা প্রশ্ন ছুঁড়ে প্রমাণ করা হবে - 30 লাখ নয়, 3 লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল 1971-এর 'গন্ডগোলে'। 3 লাখকে ভুলে 'থ্রি মিলিয়ন' বলা হয়েছিল তখন! রাজনৈতিক প্রাধান্যের জন্য ইতিহাস বিকৃতির প্রপাগান্ডায় ইতিহাস চর্চা হয়ে উঠবে 'পুরনো কাসুন্দি'।


সমপ্রতি সাপ্তাহিক2000-এ কবি নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্ক নিয়ে। যেখানে স্থান পেয়েছে- 1971এর 7মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণ, মেজর জিয়াউর রহমানের লেখা 'একটি জাতির জন্ম', সমপ্রতি প্রকাশিত মার্কিন ইন্টেলিজেন্সের দলিল এবং প্রাসংগিক আলোচনা।


ইতিহাসের বিভ্রান্তি দূর করার পথে হয়তো আরো খানিকটা এগুনো যাবে জার্মান বেতার ডয়েচে ভেলে বাংলা বিভাগের '35 বছরে বাংলাদেশ'-এর ষোড়শ পর্ব শুনলে। ডয়েচে ভেলের সম্পাদক মাসকাওয়াথ আহসান এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক আবদুল্লাহ আল ফারুকের গ্রন্থনা উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটিতে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ - মেজর জিয়ার ঘোষণা-র অডিও, স্বাধীন বাংলা বেতার বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শব্দ সৈনিক বেলাল মোহাম্মদের সাক্ষাৎকার, মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রের প্রথম সংস্করণের অন্যতম গ্রন্থিক ও ইতিহাস গবেষক আফসান চৌধূরীর প্রামাণিক বয়ানসহ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়।

"ইতিহাসের সবচে' বড় ট্র্যাজেডী - বিজয়ের অঙ্গুলী হেলনে তা লেখা হয়। পূর্বসূরীকে স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে ইতিহাসের তথ্য উপাত্ত ধ্বংস বিজয়ের এক চিরকালীন প্রবণতা। কিন্তু যেটা ধ্বংস করা যায় না তা হচ্ছে প্রতীক। তাই ইতিহাসের গবেষকরা প্রতীককে অনুসরণ করে পৌঁছে যান সত্যের কাছে। কোথাও না কোথাও সত্য লুকিয়ে থাকে অথবা ঘুমিয়ে থাকে প্রতীকের খোলসে - শুধু নির্ণয়ের অপেক্ষায়।"

0 মন্তব্য::

  © Blogger templates The Professional Template by Ourblogtemplates.com 2008

Back to TOP