ইরানী চলচ্চিত্র: অ্যা সেপারেশন (২০১১)
ছোটবেলার বিটিভিতে ইরানী ছায়াছবি দেখতাম। বাংলায় ডাব করা থাকতো। নাচ নেই, গান নেই, মারামারি নেই; কিন্তু গল্পগুলো ছিলো অসাধারণ।
আজ টরেন্ট থেকে নামালাম, ইরানী ছায়াছবি 'অ্যা সেপারেশন'। সাবটাইটেল নামাতে গিয়ে দেখি - বাংলাও আছে। মোবাইল ফোনে বাংলা সাবটাইটেলেই দেখা শুরু করলাম।
দেখতে গিয়ে হঠাৎ করে মনে হলো, খুব কাছাকাছি সময়েই এ সিনেমার কাহিনী পড়েছি। তড়িৎ মনে পড়লো, পরশুই সচলায়তনে এক অতিথি লেখক এটা নিয়ে লিখেছেন।
ইরানে থাকা না থাকা নিয়ে নাদের-সিমিন দম্পতির দ্বন্দ্ব, বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে শরণাপন্ন হয়। সিমিন চায় তার কন্যা তারমাহের সুন্দর ভবিষ্যৎ, বিপরীতে নাদের চায় অসুস্থ বাবার সেবা। তারমাহে কার সঙ্গে থাকবে সেটা নিয়েও তীব্র মনস্তাত্বিক সংকটের গল্প। সিমিন অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যায়। অসুস্থ বৃদ্ধের সেবায় আসে পরিচারিকা রাজিয়া, সঙ্গে শিশুকন্যা সুমাইয়া। ঘটনাক্রমে এক অনাগত শিশু খুনের দায় নিতে হয় নাদেরকে। শেষে কাঁচের দেয়ালের দুপাশে নাদের-সিমিন। সেপারেশনের শেষ পরিণতি কী হয়?
দর্শক হিসেবে কোনো দৃশ্যে বিরক্তি লাগেনি, বাড়তি লাগেনি।
রাজিয়ার ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনগুলো দূর্দান্ত লেগেছে। জানি না কেন, সিমিনের ভূমিকার লায়লার চেহারাই এমন কিনা, বারবার মনে হচ্ছিলো - দুঃখের সংলাপেও সিমিন হাসছে।
তারমাহিও ভালো করেছে।
একটা ব্যাপার দারুণ লেগেছে, তা হলো - চরিত্রগুলোর সততা। যে পরিস্থিতিতে পড়ে মানুষ আত্মরক্ষার্থে মিথ্যা বলে, লোভাতুর হয়, তার বিপরীত দ্বিধা-দ্বন্দ্বের ধুসর বিস্তার দেখা গেছে সেপারেশনের কাহিনীতে।
মূল গল্পে নাটকীয়তা নেই, যেনো খুব সাদামাটা একটা জীবনের গল্প, অথচ জটিলতাগুলো বাস্তব। এসব জটিলতার সমাধান দেয়নি গল্পকার। অনেক প্রশ্নের উত্তর অসমাপ্ত রেখেই সেপারেশন শেষ হয়েছে।
এটাই জীবন।
এবং...
সিনেমা দেখা শেষে গুগলিং করে জানলাম, অস্কারসহ অনেক পুরস্কারও পেয়েছে এ সিনেমা। রাজনৈতিক বিতর্কও ছড়িয়েছে। আনন্দবাজারের রিভিউটা অন্যরকম।