25 January, 2016

Yes, My Accent is Real: Kunal Nayyar

গত বছর টিভি সিরিজ দেখে অনেক সময় কাটিয়েছি।
বিশেষ করে The Big Bang Theoryর সিজন ১ থেকে ৮ পর্যন্ত দেখেছি। এখন ৯ চলছে।

বিগ ব্যাং-এর রাজ তথা রাজেশ কুথ্রপলিকে নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই।
শেলডন, লিওনার্ড, হাওয়ার্ড কিংবা পেনীর থেকে কিছুটা কম হাইলাইটেড চরিত্র। তবুও উজ্জ্বল। আসল নাম কুনাল নায়ার।
গত বছর হায়েস্ট পেইড টিভি অভিনেতার তালিকায় ৩য় ছিল কুনাল।

কুনালের লেখা ১ম বই "Yes, My Accent Is Real: and Some Other Things I Haven't Told You"    প্রকাশিত হয়েছে গত বছর সেপ্টেম্বরে।

শুরুতেই কুনাল বলেছে - এটা কোনো আত্মজীবনী নয়, বরং জীবনের বিভিন্ন না বলা গল্প।
৩৪ বছর বয়েসী গল্প কেমন হতে পারে?

অনেক গল্প স্ট্রাকচার্ড।
ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে অ্যামেরিকা পড়তে গেলে সাইকোলজিক্যাল ও কালচারাল শকের গল্পগুলো খুব কমন।
তবে কুনাল বলেছে তার নিজস্ব ভঙ্গিতে। মাঝে মাঝে হাল্কা রঞ্জন মনে হয়েছে। তবে, সাবলীল ছিল।

জিকোর সাথে বন্ধুত্ব। নারী সংক্রান্ত অস্বস্তি ও সুপ্ত ইচ্ছা। মিশতে না পারার এবং নিজের বাদামী চামড়াকে দায়ী করার গল্পগুলো দারুণ।

সর্বোপরি মনে হয়, কুনাল নিজের জীবন নিজেই বানিয়েছে। পাল্টিয়েছে ২ বছরে। টয়লেট ক্লিন করেছে, গান গেয়েছে, নেচেছে, অভিনয় করেছে। সমালোচিত ও নিন্দিত হয়েছে বারবার। পাবলিক বাসে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। চোখের পানি লুকিয়েছে, কিন্তু হেরে যায় নি।

সবচেয়ে ভালো লেগেছে - কুনাল জানতো সে কী, এবং কী চায়।
সে বুঝে গিয়েছিল সে অভিনয়ের লোক। তাই বিজনেস স্কুল থেকে ফাইন আর্টসে গিয়ে মাস্টার্স করেছে। ভিসা ফুরানোর চরম ক্রান্তির দিনগুলোতেও আশাহত হয়নি। কাঁচা মাছ মাংসের হোটেলে কাজ করেছে।

আর প্রেম?
সে যেন  - বিগ ব্যাং থিয়রির রাজের মতোই ভাগ্য।
চোখে চুমু খেয়ে যে তরুণীকে আপন করতে চেয়েছিল সে, জন্মদিনে ব্যান্ড দল নিয়ে যাকে বাসায় গিয়ে নেচে গেয়ে চমকে দিয়েছিল, সে তরুণী তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে বুক ভেঙে। সবুজ ভ্যানের মাসলওলা সুঠাম আমেরিকান যুবকের সামনে ভারতীয় কুনাল কেবল শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও তুচ্ছ। ভালোবাসা ফিরিয়ে দেয়ার চেয়েও বড় বেদনা বোধ হয় ফেরানোর সময় নতুন করে কিছু ভালোবাসা দেয়া। ছয় ঘন্টার ড্রাইভ করে শহরে ফেরার সময় কুনাল কি কেবল ভেঙে যাওয়া প্রেমের বেদনাই আনে, নাকি আনে পূর্বরাতের সঙ্গম স্মৃতি, টিফিন বক্সে নাস্তা? ফেরার পথে গাড়িতে তেল নেয়ার সময় জাপানী তরুণীর এসএমএস না পেলেও কুনাল কি একা থাকত?
না, মনে হয় না।

বিভিন্ন তরুণীর সঙ্গে প্রেম আর সম্পর্কের পাশাপাশি কুনালের জীবনে তার বাবার প্রভাবের গল্পগুলো এসেছে ঘুরে ফিরে। বিয়ের গল্প লম্বা ছিল, নেহা কাপুরের সঙ্গে সম্পর্কের অনেক কিছু না বলা রয়ে গেছে বইতে, তবে ভারতীয় কালচারের (বিশেষ করে বিয়ে অনুষ্ঠানের) ব্র্যান্ডিং হয়েছে ভালো।

বিশেষ আগ্রহ ছিল, বিগ ব্যাং-টীমের সাথে তার যোগাযোগ কীভাবে হয়েছিল, কী ঘটেছিল।
সে চ্যাপ্টার কুনাল অল্প পরিসরে যথেষ্ঠ নাটকীয়তা নিয়ে লিখেছে।

প্রশ্ন জাগে - কেন এই বই লেখা বা কী হলো এই বই পড়ে?
এই বই মূলতঃ ভেঙে না পড়ার গল্প। বারবার ইমোশনাল ব্রেক ডাউন সামাল দেয়ার গল্প।
অঞ্জন যেমন গেয়েছে তেমন অনেক হেরে গিয়েও হার স্বীকার না করার গল্প।

কুনালের কাছে আরেকটা বইয়ের আশা থাকলো, হয়তো অনেক দিন পরে - শুধু বিগ ব্যাং থিয়রী মানুষগুলো নিয়ে লেখা হবে সে বই।
পড়বো ঐ বই।

Read more...

24 January, 2016

3:00AM : Nick Pirog



নিক পিরোগের নভেলা। হ্যানরি বিন সিরিজের বই।
৮০ পৃষ্ঠার মতো।

হ্যারি বিন এক তরুণ, যে দিনের ২৩ ঘন্টা ঘুমায় এক ঘন্টা জাগে। এটা একটা রোগ, সারা বিশ্বে মাত্র ৩ জন আছে এ রোগে। রোগটির নামই হ্যানরি বিন।
সে যেমন বলে, আই অ্যাম হ্যানরি বিন অ্যান্ড আই হ্যাভ হ্যানরি বিন।
প্রতি রাত ৩টা থেকে ৪টা এই এক ঘন্টা তার জীবন। এ সময়ে সে খাওয়া দাওয়া, মাস্টারবেশন, ব্যায়াম, দৌড়, অনলাইনে স্টক ট্রেড, গেইম অব থ্রোনস দেখা; সবই করে। অদ্ভুত জীবন। মাঝে মাঝে রাত ৩টার বদলে ২টা ৫৮ মিনিটে ঘুম ভাঙলে অদ্ভুত আনন্দ হয়, মনে হয় ক্রিসমাসের মতো এক্সট্রা ছুটি, এক্সট্রা জীবনের, বেঁচে থাকার আনন্দ।

ঘটনা শুরু হয় এক রাতে, যখন সে রাতে ৩টা ৩৮ মিনিটে সামনে বাসা থেকে আসা এক মহিলার চিৎকার শোনে। জানালায় উঁকি মেরে দেখে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গাড়িতে উঠে চলে যাচ্ছে। পরে গিয়ে দেখে ঐ বাসায় এক মহিলা খুন হয়েছে।
প্রতি রাতে তার হাতে সময় আছে মাত্র ১ ঘন্টা। কীভাবে সে এই খুনের রহস্যের সমাধান করবে?
সমাধান হয় শেষ পর্যন্ত। অনেক টুইস্ট আছে। যেহেতু নভেলা, তাই লেখক অপেক্ষার কিছু রাখে নাই। স্লিম গল্পে দ্রুত সমাপ্তি হয়েছে।

বড় পরিসরে লিখলে হয়তো পড়তে মজা পাওয়া যেতো। ছোট হওয়াতে অতি নাটকীয়তা রেখে শেষ হয়েছে।
যেমন বিনের বাবা কে, কোত্থেকে এতো তথ্য পায়; এগুলো অতিকাল্পনিক মনে হয়।
তবুও ফিকশন।
মেনে নেয়া যায়।

এ সিরিজের অন্য আরো বই আছে দেখলাম। পড়ার আগ্রহ নেই।

Read more...

15 January, 2016

1Q84 : Haruki Murakami



জাপানিজ ঔপন্যাসিক হারুকি মুরাকামির ট্রিলজি।
বছর দুয়েক আগে প্রথম খন্ড পড়েছিলাম। বাকী দুপর্ব এবার পড়তে গিয়ে দেখি ভুলে গেছি অনেক কিছু। তাই আবার শুরু থেকে পড়তে হলো। 

উপন্যাসের প্রধান দুই চরিত্র – অমামি আর টেঙ্গো।
তরুণী অমামি পেশাদার খুনি। স্ত্রী-শিশু নির্যাতনকারীদের দক্ষতার সঙ্গে খুন করে সে। এক বিধবা ধনী মহিলা অমামীর গডমাদার। বিধবা ধনী মহিলার মেয়ে এরকম নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, তাই সে প্রতিশোধ নিতে এসব খুনের আয়োজন করে। অমামিরও কোনো অপরাধবোধ নেই।

অন্যদিকে টেঙ্গো একটা ক্র্যাম স্কুলে পড়ায়। কোচিং সেন্টার টাইপ। ম্যাথ পড়ায়। এর বাইরে সে এক ম্যাগাজিনের সহসম্পাদক। গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় ফুকায়েরি নামের এক কিশোরী মেয়ের গল্প নিয়ে সম্পাদক কোমাটসু অনেক উৎসাহিত। সে চায় টেঙ্গো গল্পটি নিজের ভাষায় লিখুক। অন্য এক প্রতিযোগিতায় (আকুতাগাওয়া পুরস্কার) জমা দেয়া হবে। টেঙ্গো ঘোস্ট রাইটার। ফুকায়েরি যদি সেরা পুরস্কার পায় বই আকারে এ গল্পের বই অনেক বিক্রি হবে, ভালো ব্যবসা হবে। ঘটনা আগাতে থাকে। ফুকায়েরি পুরস্কার পায়, বেস্ট সেলার হয়। কিন্তু, পেছনের অন্য সত্যও বের হয়ে হয়ে। গুপ্ত সংঘের কর্মকান্ড। নিষিদ্ধ ধর্ম চর্চা। 

ক্রমশঃ অমামি ও টেঙ্গোর জগত এক হয়ে আসে। তারা শৈশবে স্কুলে একবার একে অন্যের হাত ধরেছিল। সেই থেকে অদৃশ্য যোগাযোগ, দেখা হবেই হবে।
অন্যদিকে অমামি ভুগছে এক নতুন জগতের বিভ্রমে। ১কিউ৮৪। জাপানী ভাষায় কিউ=৯। কিন্তু, উপন্যাসে কিউ দিয়ে এক কাল্পনিক ৮৪ সালের গল্প ফাঁদা হয়ে হয়েছে।
বাস্তবতা আর পরাবাস্তবতার বিভ্রমে বা মিশ্রণে আকাশে দুটি চাঁদ দেখা যায়। দেখে কেবল অমামি ও টেঙ্গো। 

এখানে শেষ হতে পারতো। কিন্তু মুরাকামি সম্ভবত বাণিজ্যিক কারণে ৩য় খন্ড লিখতে গিয়ে অহেতুক বড় করেছে বই। নয়তো অমামি যখন গুপ্ত সংঘের (লিটল পিপল) নেতা যে কিনা আবার ফুকায়েরির বাবা, তাকে খুন করে, অনেক অমেঘ সত্য আর নিয়তি জেনে যায়, সেখানেই শেষ হতে পারতো।
সেই ঝড়ের রাতে বিলাস বহুল হোটেলে অমামি যখন এসব শুনছে, বাইরে প্রবল ঝড় বজ্রপাত, শহরের অন্য প্রান্তে টেঙ্গো অপরিকল্পিত সঙ্গম করছে ফুকায়েরির সাথে, অথচ এ সঙ্গমের ফলে অন্তস্বত্ত্বা হচ্ছে অমামি। সে নিজেই বলছে সে টেঙ্গোর সন্তান বহন করে চলেছে। পরে সব শুনে টেঙ্গোও মেনে নেয়। এর কোনো নিরেট যুক্তি নেই। আছে কেবল বিভ্রম।

মুরাকামির একনিষ্ঠ ভক্তরা বলবে আবার পড়ার কথা আবার বোঝার কথা। যেমন ঘটেছে কাফকা অন দ্য শোরে। কিন্তু পাঠকের সময় কই? ব্যস্ত জীবনে রিডীং ফর প্লেজারই সই!
অমীমাংসিত প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা পাঠকের জরুরী নয়। নিজের কল্পনা জগতে কোনো এক অবসরে হয়তো মিলিয়ে নেয়া যাবে। যদি মিলে যায় অবসর...।

Read more...

11 January, 2016

Irrationally Yours: Dan Ariely



ওয়াল স্ট্রীট জার্নালে ড্যান এরিয়েলির কলাম ছিল এটা। ঠিক কলাম না, চিঠি পত্রের উত্তরের মতো। র‍্যাশনালিটি আর ডিসিশন মেকিং নিয়ে ছোট ছোট চিঠির ছোট কিন্তু গভীর উত্তর।
পড়তে মজা লাগে। অনেক হিউমারাস উত্তর আছে।

প্রশ্নগুলোও সেরকম মজার।
যেমন – ক্রিসমাসে গ্রিটিংস কার্ড পাঠানোর মানসিক বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি কীভাবে পাওয়া যায়?
ফেসবুকে লাইক বাটন আছে, ডিসলাইক বাটন নেই কেন?
নব বিবাহিত স্বামী চায় টাকা দিয়ে ঘর সাজাতে, অন্যদিকে বৌ চাচ্ছে হীরার আংটি। কোনটি যৌক্তিক?
প্রমোশনের পরে বেতন বেড়েছে, কিন্তু কাজের চাপও বেড়েছে। তাহলে বাড়তি বেতনের যৌক্তিকতা কোথায়? সব মিলিয়ে তো সমানই হয়ে গেল!

এরকম প্রায় শতাধিক প্রশ্ন উত্তর।
ভালো ব্যাপার হলো, যখন খুশি তখন একটা প্রশ আর একটা উত্তর পড়া যায়। অন্য বইয়ে যেমন লম্বা চ্যাপ্টার থাকে, একনিষ্ঠ মনোযোগ দিতে হয়, সময় দিতে হয়, এ বইয়ে এরকম কিছু নেই।

Read more...

02 January, 2016

বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা - বিনয় ঘোষ

ইতিহাসের বই মানে, একেবারেই নিরস ইতিহাসের বই। মাঝে মাঝে বিনয় ঘোষের সহজাত লেখনী ঝলক আছে, তবে খুবই কম। মেট্রোপলিটন মন মধ্যবিত্ত বিদ্রোহের থেকে বেশ কিছু অংশের যোগ আছে।বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীত উত্থান পতন ও বিকাশের অংশগুলো পড়তে ভালো লাগবে। রেফারেন্স আছে প্রচুর।
মামফোর্ড, হ্যারিংটনের বিভিন্ন লেখার রেফারেন্স এসেছে বারবার।

অনেক খাটুনির লেখা। বিনয় ঘোষ নিজেও সম্ভবত অনেক পড়তেন। শুধু তাই-ই নয়, যা পড়তেন সেটা আত্মস্থ করতে পারতেন। এরপর নানান বিষয়ের মধ্যে চমৎকার একটা যোগসূত্র তৈরি করতে পারতেন। এটা বিশাল এল দক্ষতা!

অ্যাকাডেমিক লোকজন পড়ে উপকৃত হবে, মজা পাবে। নন অ্যাকাডেমিকদের জন্য দ্রুতপঠনই ভালো।
মাঝে মাঝে কিছু জমিদার কাহিনী আছে। যেমন রাজা রামদুলালের গল্প (পৃষ্ঠা ১০১-১০৬)। ইংরেজদের সাথে তার সম্পর্ক, ব্যক্তিগত জীবন, ব্যবসায়িক উন্নতি। এবং পরের প্রজন্মের পতন।

বিভিন্ন ঘটনা সে সময় ‘সোমপ্রকাশ’ ‘প্রভাকর’ ইত্যাদি পত্রিকা কীভাবে ছাপিয়েছে পড়তে মজা লাগে। খবরগুলো কেবল তথ্য নয়, ফাঁকে ফাঁকে প্রতিবেদকের ব্যক্তিগত মতামতেও ভর্তি ছিল।

Read more...

  © Blogger templates The Professional Template by Ourblogtemplates.com 2008

Back to TOP