আজ ৬ মাঘ, ১৪১৪ বঙ্গাব্দ
প্রোবাবিলিটির বাইনোমিয়াল থিয়রী কিংবা পারমুটেশন কম্বিনেশনের অনেক গোলক পেরিয়ে আজ সকালে কাওসার আহমেদ চৌধুরীর রাশিফল পড়ি। ইন্টারনেটে নিত্য বসা হলেও পত্রিকা পড়া হয় না, তাও আবার পত্রিকার মাঝে প্রথম আলো, প্রথম আলোর মাঝে ছুটির দিনে, তার ভেতরে 'এ সপ্তাহের রাশি', এবং সেটা কেবলই শনিবারে। সুতরাং এ ঘুর্নিপাকের সেট ফাংশনে চক্কর মেরে রাশিফল পড়ার সম্ভবনা অনেক ভগ্নাংশের এক ভাগ। সম্ভবনাকে ঘটনা করে দেখি - এই জ্যোতিষি মশাই আজকের দিনে আমাকে বলে দিলো - "ওম্ মা!-আপনি এখনও ভিসার জন্য দৌড়ানো বা ‘দাঁড়ানো’-কোনোটাই করছেন না? জলদি করুন! ইয়োর সময় হ্যাজ কাম। বিদেশে যেতে হবে।"
হা হা। কোথায় যাবো? কবে! সময় হ্যাজ কাম?
.
ছোটোবেলায় গল্প শুনতাম - য়্য্যূরোপ-অ্যামেরিকায় নাকি ধুমধাম করে সিজন চেঞ্জ হয়। সকালে রোদ তো সন্ধ্যায় ঝমঝম বৃষ্টি, অথবা তুষারপাত। টিভির ওয়েদার নিউজে বলে - নতুন ঋতু শুরু হলো। দেশে সেরকম চোখে পড়তো না। একুশে ফেব্রুয়ারীর সকালে সুয়েটার পড়ে প্রভাত ফেরী, আর ঠিক দশটা এগারোটার দিকে গরম লেগে ওঠা, সুয়েটার খুলে ফেলা; ইংগিত দিতো - শীত প্রায় শেষ। গরম আসছে সামনে। অথবা খনার বচনে - "ভাদ্র মাস শীতের জন্ম মাস" হয় পৌষের আগমনী বার্তা। তবুও বোঝা যেতো - ঠান্ডা, গরম কিংবা বর্ষা-বাদলের দিন আসছে সামনে।
.
পাতায়ায় এসে - সেটাও হারিয়ে গেলো। সারা বছর একই রকম। জুন-জুলাইয়ে উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া, অগাস্ট সেপ্টেম্বরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, মাঝে দমকা বাতাস। এটুকুই। এক ঘেঁয়েমী ঋতু বদল। তবে
এবার বছরের প্রথম দিন থেকেই ঠান্ডা বাতাস বইছে। সকালে কুয়াশা। আর আমার বেহেশতী ঘুম জাঁকিয়ে আসা। লজের সামনে ইউক্লিপটাসগুলোর পাতা ঝরছে অবিরাম। সবুজ ভাবটা এখন নেই। মাথা ন্যাড়া শীর্ণ শরীর।
.
এখনো নিউ ইয়ারের ভাব কাটেনি। বেচে যাওয়া পটকাগুলো ফুটছে মাঝরাতে। কখনো আচমকা আলোকসজ্জা। চায়নিজ নিউ ইয়ারটাও মনে হয় কাছাকাছি সময়ে। দু'বছর আগে ড্রাগন র্যালির সন্ধ্যাটা মনে পড়ে এখনো। বছরগুলো এভাবেই যায়।
.
বন্ধু দম্পতি প্রিয়-রুমকি ক্যানাডায় আছে এখন। গত রোববারে ফোনে কথা হচ্ছিলো - "আমার ইদানিং কম্পিউটারের সামনে অনেকক্ষণ বসে থাকলে চোখে সমস্যা হয়। ভালো না দেখার এ সমস্যাটা নতুন না। ক্লাসে তাই সামনের সারিতে থাকতাম বোর্ডের লেখা দেখার জন্য। সবাই ভাবতো - ছাইপাশ। ইদানিং সমস্যাটা বেড়ে যাচ্ছে" ; শুনে রুমকি বললো - "আর অবহেলা করো না, তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখিয়ে, দরকার হলে চশমা নিয়ে নাও"।
আমার সেই একই ভাবনা - দেখি কতোদিন চশমা ছাড়া পারি।
রুমকি বললো - "শোনো, এখন আর এরকম করো না, আমরা কিন্তু এখন আর পোলাপাইন নাই। সমস্যা হলে কেয়ার দরকার"।
আমার হাসি পায়।
বারবার রিপিট করি - "আমরা এখন আর পোলাপাইন নাই। আমাদের বয়স হয়ে যাচ্ছে।"
আমি যেবার পঁচিশে পা দিলাম, সেবার থেকে মন খারাপ। বয়স বেড়ে যাচ্ছে।
.
আমি এখন আর পোলাপাইন নাই।
বয়স বেড়ে যাচ্ছে।
আজ বাড়লো আরও এক বছর!
.
.
.
2 মন্তব্য::
এগুলো কি লুকোনো মুক্তো?
চুপিচুপি লেখা হয়।
ব্যাপার নাহ, খুঁজে নেবো সময়মতোন।
এগুলো গোপন দীর্ঘশ্বাস।
কখন কিভাবে ভেতর থেকে বেরিয়ে যায় :)
হুমম, অনুভূতিঅলা মানুষ তো এসব খুঁজে বের করবেই।
ধন্যবাদ।
Post a Comment