18 October, 2007

নতুন খাতার পাতায়

ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে মনে হয় অনেক কাল পেরিয়ে যাচ্ছে। ধাপগুলো শেষ হচ্ছে না, বেড়ে যাচ্ছে প্রতি মুহুর্তে। অল্প সময়টুকুয় ভাবনার অনেকগুলো ঢেউ এসে তোলপাড় করে দিচ্ছে। মনের ধারাপাত আর সিঁড়ির ধাপ এ দু'য়ের মাঝামাঝি নো ম্যানস ল্যান্ডে আসতেই মনে হয় পা ফসকে পড়ে যাবে। তড়িৎ নিজেকে সামলে নেয় লোমেলা, রেলিং ধরে সাবধানে পা ফেলে। এমন হচ্ছে কেনো? গত রাতে মেইলটা পাওয়ার পর এ ভাবনা জেঁকে বসেছে মাথার ভেতর। আজ সকাল থেকে একটানা ভ্রু-প্লাগ, হেয়ার হারবাল, প্যাডিকিউর-ম্যানিকিউরে এতোটা সময় কেটে গেলো, একটুর জন্যও মন বসেনি। পার্লারের নাক বোঁচা মেয়েটি যতবারই কিছু জিজ্ঞেস করেছে, লোমেলা হু-হ্যাঁ করে গেছে। হিসাব নিকাশটা মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে কেবল, থিতু হতে পারছে না - খানিকটা এক্সসাইটমেন্টও ঘিরে রেখেছে। সিঁড়ির শেষ ধাপে পা দিয়ে আবার পেছনে তাকায় লোমেলা। কতোগুলো ধাপ? মাথায় যে সংখ্যাটা কাঠঠোকরার মতো ঠুকিয়ে চলেছে ততবার সিঁড়ি ওঠানামা কি সম্ভব? কতক্ষণ লাগবে! কিংবা কতো দিন লাগবে? জিরো পয়েন্ট টু সিক্স নাইন মিলিয়ন!

দুই
দুপুরের পর থেকে আকাশের মুখ গোমড়া। অনেকক্ষণ ঝিম মেরে আছে চারপাশ। গুলশান লেকের শরীর শীর্ণ হয়ে আসছে ক্রমাগত। বছর তিনেক আগে লোমেলারা যখন নতুন ফ্ল্যাটে ওঠে তখনও খানিকটা নীল ছিল পানি। কচুরিপানা আছে সেরকমই, তবে পানির রং গেছে পাল্টে। আবার মনে হয় - মেঘলা আকাশের কারণে হয়তো পানি কালো মনে হচ্ছে! সেদিন জাহেদ ভাই বলছিলো - বাংলার আকাশ আর বাংলার মেয়ের মতিগতি বোঝা দায়। এই রোদের ঝিলিক, এই বৃষ্টি কখনো বা দো-মনা ভাব। লোমেলার মনে হচ্ছে - জাহিদ ভাই ইদানিং দো-মনা ব্যাপারটিকে ইনিয়ে বিনিয়ে টেনে আনছে বারবার। হয়তো সিদ্ধান্ত চাচ্ছে দ্রুত। পরিচয়টা খুব বেশী দিনের নয়, ফোরামে রিসেন্ট কার্টুন ডিবেট ডিসকাশন থ্রেডে মন্তব্য - প্রতিমন্তব্য। পরের মান্থলি মিটিংয়ে আলাপ এবং জানাশোনা। জাহিদ ভাই এ-লেভেল শেষে কিছুদিন ইস্ট ওয়েস্ট বিবিএ-তে ছিল। পরে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ব্রিসটল, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে এমবিএ। দেশে ফিরে ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ করছে। সিক্স ফিগারের স্যালারি, নোকিয়া পিডিএ ভর্তি শিডিউল - শহুরে হান্টার তরুণীরা এমন সুদর্শন ঈর্ষণীয় ইয়াংকে খুঁজে চলে দিনরাত। তবে জাহিদ ভাই অন্য রকম। মার্জিত ব্যবহার - মৃদূভাষী - ভীষণ ব্যক্তিত্বময় আচরণ। সব মিলিয়ে কালো ফ্রেমের চৌকোণা চশমা কিংবা চশমার ভেতরের চোখগুলো ইদানিং লোমেলাকে কাতর করছে খুব।

সেদিন ইফতার পার্টি শেষে ইমান্যুয়েলের সামনে জাহিদ ভাই নিচুস্বরে বলেছিলো - বাল বিখারকি, টুঁটি কবরোপে যাব কোই মাহযাবিন রোনতি হায়, মুঝে অফসর খিয়াল আতে হ্যায়, মোউত কিতনি হাসিন হ্যায়। শুনে লোমেলার মনে হয়েছিলো এই ইমান্যুয়েল, এই স্ট্রীট লাইট - সব নিভে যাক, থেমে যাক সব নি:শ্বাস, পাশাপাশি কেবল জাহিদ ভাই আর লোমেলা! এরকম উলুথালু ভাবনায় লাজুক সংকোচ ভর করে। সংকোচ থেকে মন ফেরাতেই এক বড়সড় নি:শ্বাস ফেলে লোমেলা। এ নি:শ্বাসে যতোটা না জাহিদ ভাইকে নিয়ে দমবন্ধ ভাবনা, তারচে' বেশী দো'মনা মনকে স্থির করে সিদ্ধান্ত নেবার সংকট। ততক্ষণে বাইরে সন্ধ্যা নেমেছে। বৃষ্টি নামেনি, হয়তো লোমেলার মতো আকাশও দ্বিধান্বিত। ব্যালকনি থেকে উঠে ড্যাডির স্টাডি রূমে যায় লোমেলা। দ্বিতীয় খোপের খালি জায়গায় একটা অদৃশ্য বই জায়গা করে নেয়। কল্পনা করতে ভালো লাগে - লোমেলার লেখা বই। কো-অথর হিসেবে জাহিদ ভাইয়ের নাম আছে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। তবে আলোড়ন তোলা বই। জিরো পয়েন্ট টু সিক্স নাইন মিলিয়ন - ফ্যাক্ট অর পলিটিক্স?

তিন
গতকাল চাঁদ দেখার অপেক্ষা ছিল। আজ অপেক্ষা কিংবা আগ্রহ কোনোটাই নেই। আগামীকাল ঈদ। সন্ধ্যার পর গাড়ী নিয়ে বের হয় লোমেলা। 'লিবাস'এ জামাটা কেনা না কেনা নিয়ে সংশয় ছিল। লোমেলা চেয়েছিল স্ট্রেইট নেক, কালারও আরেকটু লাইট হলে ভালো হতো। লিবাস থেকে সামিরার বাসা ওয়াকিং ডিসট্যান্স। জামা কিনে সামিরার বাসায় আড্ডা হয়। টিভি চ্যানেলগুলোয় ঈদের গান চলছে - রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। বাস্কিন-রবিন্সের আইসক্রীম ছিলো ফ্রিজে। খেতে খেতে আলাপ জমে ইতস্তত, বিক্ষিপ্ত। লোমেলা টিভির চ্যানেল পাল্টায়। ইন্ডিয়ান চ্যানেলগুলোও এবার ঈদের উপর হাইলাইট করছে। জিটিভিতে নভরাত্রি-ঈদ নিয়ে বিশেষ আয়োজন, মাস জুড়ে সানডে নাইট স্পেশালে শাহরুখ খান। হঠাৎ লোমেলার মনে পড়ে আজ হিরো হোন্ডা সারেগামাপা গ্র্যান্ড ফিনালে। ঘন্টা কয়েক পরেই শুরু হবে, আদিত্য নারায়ণ হোস্ট হিসাবে দূর্দান্ত! লোমেলার ফেভারিট আমানত আলী, আর সামিরার প্রিয় রাজা হাসান। রেডিফে লোমেলা অনলাইন ভোট দিয়েছে। সামিরার এমপিথ্রি প্লেয়ারে তখন রাজা হাসানের হাস্কি ভয়েস - আল্লাহ কি বন্দে হাসতে - - -। তারপর অনিক ধর নিয়ে আলাপ হয়। সনু নিগমের কপিক্যাট কোলকাতার ছেলে অনিক সারেগামাপা বাংলার চ্যাম্পিয়ন, হিন্দিতেও চ্যাম্পিয়ন হলে পাবলিক ওপিনিয়ন কেমন হবে সেটা নিয়ে তর্ক জমে। হিমেশ রেশমিয়ার নাটুকেপনা নিয়েও হাসাহাসি হয়। লোমেলা চ্যানেল পাল্টায় বারবার। ফোরামে লোমেলা মিডিয়া অবজারভার; বাংলা-হিন্দি-উর্দূ- ইংরেজী চ্যানেলে নিয়মিত চোখ রাখতে হয়। অনগোয়িং কনসেন্ট্রেশন আর্টিকেল স্যাটেলাইটে ডেইলি সোপ। সাত ফেরের সালুনি, সারথীর মানসেন, দুলহানের ভেদিয়া-সিন্দুরা, মায়িকার মাহী অথবা কসম সে'র বাণী ওয়ালিয়ার নিত্য জীবন নিয়ে নোট রাখছে লোমেলা। সাথে পিটিভি-হোমের স্ত্রী নিয়ে চমৎকার কমপারিটিভ অ্যানালাইসিস হবে। সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশনের এলিমেন্ট হিসেবে আর্টকেলটা প্রয়োজনে এক্সটেন্ড করা যাবে। তবে আপাতত: ফোরামে ঝড় উঠবে নিশ্চিত! আচমকা স্টার ওয়ার্ল্ডে চুম্বক দৃশ্য শুরু হলে সামিরা লোমেলাকে খামচি মেরে বসে - 'তুই একটা পুরা শয়তানের নানী দাদী'।

সামিরার বাসা থেকে ফেরার পথে গাড়ীতে এফএম এইটি নাইন পয়েন্ট সিক্স; রেডিও টুডে। সংবাদ শিরোনামে - 'কাঁচপুরে চল্লিশ বাসযাত্রীর সর্বস্ব লুট'। চল্লিশ জনের মাল লুট করতে কয় জন ডাকাত লাগে? কতক্ষণ লাগে? সলিটেয়ারে হিডেন কার্ডগুলো উন্মোচন করলে বাকী খেলা যেমন টপাটপ মিলে যায় তেমন করে চল্লিশ জনের হিসাব করতে গিয়ে সকালের সংখ্যাটা আবার ফিরে আসে। কিভাবে আগানো যায়, কোথায় আরো ম্যাটারিয়াল পাওয়া যায় সেসব ভাবতে ভাবতে লোমেলা বাসায় পৌঁছে। টু হান্ডরেড অ্যান্ড সিক্সটি নাইন থাউজেন্ড!

চার
ঈদের এসএমএস পাঠানো শুরু হয়ে গেছে। লোমেলার মোবাইলে বেশ কিছু গ্রিটিংস আসলো ঘনঘন। শেষটা দেখে মেজাজ চড়ে যায়, আসিফের এসএমএস। মানারাতে ভালো বন্ধু ছিল আসিফ । এরপর, আরো বেশি কিছু। লোমেলা তখন নিজেকে জেফরি আর্চারের হুইমি হিরোইন এবং আসিফকে দেয়াল বেয়ে পনেরো তলায় ওঠা ইস্পাত হিরো ছাড়া কিছু ভাবতে পারেনি। নাইনথ গ্রেডের ফাইনাল শেষে লোমেলার বার্থ ডে ছিল সেদিন। গার্লস নাইট আউটে লোমেলা নিজেকে কিশোরীর বদলে রমণী ভাবতে চেয়েছিলো অদ্ভুত সন্ধ্যায়। পরে আসিফের বাটারফ্লাই আচরণে লোমেলা দূরে সরেছিল, কেবল সরেনি সন্ধ্যার ভুল ভালোবাসা, ভুল স্মৃতি। মাঝে মাঝে মনে হয় স্মৃতিকোষে ছুরি চালিয়ে ঐ অংশটুকু ফেলে দিলে ভালো হতো। পারা যায় না। আজ যেমন আসিফের এসএমএস অনুতাপ জাগিয়ে দেয় মনে। রাগে কাঁপতে কাঁপতে লোমেলা রিপ্লাই করে - "টোল্ড য়্যূ থাউজেন্ড টাইমস, এগেইন - প্লিজ নেভার কন্টাক্ট মী। আই হেইট য়্যূ - বিচ।"

এক অসহনীয় যন্ত্রণায় লোমেলার কান্না পায়। জিটিভিতে ততক্ষণে বিজেতা ঘোষিত হচ্ছে, আমানত আলী থার্ড। কষ্টটা আরো জাঁকিয়ে বসে। এমন সময় জাহিদ ভাইয়ের ফোন -
- কি করো?
- কিছু না।
- ঈদ মোবারক।
- আপনাকেও।
- আগামীকাল প্ল্যান কি?
লোমেলা এই ফাঁকে টিস্যুতে চোখ মোছে - 'কোনো প্ল্যান নেই'।
- লেট'স গো সামহয়্যার!
লোমেলা চুপচাপ।
- 'আর য়্যূ অলরাইট?' জাহিদ ভাইয়ের উদ্বিগ্ন প্রশ্ন।
- না আমি ঠিক আছি। আপনি কি এখন ফ্রি?
- হ্যাঁ, বলো।
- আপনি আর্টিকেলটা পেলেন কোথায়?
- গত রাতে যেটা মেইল করলাম?
- হুমম
- দেখোনি? ইকনোমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি। তিন সপ্তাহ আগের ইস্যু।
- আই অ্যাম ইমপ্রেসড! দারুণ অ্যানালাইসিস। আমি ভাবছি - এটা নিয়ে খানিকটা পড়াশোনা করি। ফোরামে দেবো নাকি?
- ট্রান্সলেট করে দিও না। নিজের মতো করে গুছাও। সময় নিয়ে লিখো।
- ওকে। এটা নিয়ে কি আংকেলরা কেউ কাজ করেছেন?
- তেমন হয়নি। তিরিশ লক্ষের হিসাব নিয়ে কিছু লেখালেখি আছে। আব্বাও বলছিলেন - ইন্টারন্যাশনালি লেখা হয়নি।
- ওকে। ড্যাডি আমাকে বলছিলেন, শেখ মুজিব তিন লক্ষকে ভুলে থ্রি মিলিয়ন বলেছিল।
- আরো লজিক আছে। 'লিগ্যাসি অব ব্লাড' পড়েছো?
- শেলভে আছে দেখেছি, পড়িনি।
- তালুকদার স্যারের কিছু সংকলনও আছে পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে, ওগুলো ইংলিশে সার্কুলেট করা দরকার।
- তালুকদার স্যার মানে, ঐ যে প্রফেসর আংকেল?
- হ্যাঁ। এফএম এর লেখা ফলো করো?
- এফএম কে?
- তুমি তো মনে হচ্ছে ডেইলি সোপে ডুবে আছো ইদানিং। পেপার পড়ো না?
- ওহ, বুঝেছি - মাজহার সাহেব?
- হ্যাঁ।
লোমেলা হাসে এবার। কোনো কারণ নেই, অথবা খানিকটা অপ্রত্যাশিত ভালো লাগা।
- 'পোস্ট ঈদ গেট টুগেদার কোথায়?' জাহিদ ভাই প্রশ্ন করে।
- এবার চলেন বাঁশরীতে যাই। ওদের সেট মেন্যুটা দারুণ।
- ওকে।
- আচ্ছা, উইকিপিয়ায় দেখলাম - সুজান ব্রাউনমিলারের সুত্র মতে দুই লক্ষ থেকে চার লক্ষের মতো রেপড।
জাহিদ ভাই হেসে উড়িয়ে দেয় - 'ওটা সম্ভবত: এগেনস্ট আওয়ার উইল বই থেকে নেয়া।
- মে বি।
- হা হা। জানোই তো ইতিহাস লেখা হয় বিজয়ীর কলমে।
- আপনার হেল্প লাগবে এবার। আমি সিরিয়াসলি ব্যাপারটা নিয়ে কাজ করতে যাই।
- টেক য়্যূর টাইম, ম্যাম!
- ম্যাম?
জাহিদ ভাই এবার অন্যস্বরে কথা বলে - 'হোয়াট অ্যাবাউট টুমরো'স ইভিনিং'?
- 'হোয়াট?' লোমেলার জিজ্ঞাসায় উৎসাহের চেয়ে আবেদন বেশী।
- ওনলি য়্যূ অ্যান্ড মি । নো ওয়ান ইন দ্য ওয়ার্ল্ড! সাম ক্যান্ডেল লাইটস উইল ফিল শাই।
লোমেলা চুপচাপ। পাঁচ দশ সেকেন্ড মুহুর্ত কাটে নীরবে।
- মে আই গেট সাম টাইম?
- ইফ আই সে, নো?
লোমেলার মনে হয় গলাটা কেউ যেন চেপে ধরেছে। সে কথা বলতে পারছে না। চোখ মুখ ঝাপসা লাগছে। আরো একটু সময় নিয়ে ফিসফিস বলে - "হাউ মেনি আওয়ার্স লেফট ফর দ্যাট ইভিনিং?"
জাহিদ ভাই উচ্ছ্বাস লুকোতে পারে না - "আই ন্যূ বেবী- ইউ উইল বি মাই গার্ল"।

পাঁচ
দুই লক্ষ ঊনসত্তর হাজারকে দু'শ ছেষট্টি দিয়ে ভাগ করলে প্রতিদিন এক হাজারের মতো রেপড! লোমেলার অবাক লাগে তিন যুগেও কেউ সংখ্যাটা নিয়ে সংশয় করলো না! কম্পিউটারের স্ক্রিনে অনেকক্ষণ তাকিয়ে আছে সে। পিডিএফ ফাইলে শিরোনাম - "লুজিং দ্য ভিকটিমস - - - রিকাউন্টিং বাংলাদেশ ওয়ার"। একাত্তরের গন্ডগোলকে রিকাউন্ট করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। ফোরামে অনেক রিসোর্স জমা পড়েছে। জাহিদ ভাইয়ের ইফোর্ট খুব ইফেকটিভ হবে এবার! আট পৃষ্ঠার লেখাটা পড়তে পড়তে মুগ্ধতা জাগে বারবার। অনেকদিন এরকম সরল বিশ্লেষণের লেখা চোখে পড়েনি। প্রতি প্যারা পড়তে পড়তে লোমেলার মনে হচ্ছে বাংলা করলে আরো ডিটেইল আনা যাবে। লোমেলার ভাষার গাঁথুনি নিয়ে সবাই অ্যাপ্রিশিয়েট করে।

সারা দিনের চাপটা কমতে শুরু করেছে। ত্রিশ লক্ষের মিথ নিয়ে কাজ হয়েছে অনেক। সময়ের সাথে সাথে মানুষের আবেগ কমেছে, অ্যলায়েন্স হয়েছে বারবার। দুই লক্ষ ঊনসত্তর হাজার নিপীড়নের অযৌক্তিকতা উঠে আসবে এবার। লোমেলা সিরিয়াসলি লেখা শুরু করে, প্রথম লাইন - ফিকশন ক্যান নট সাবস্টিটিট দ্য ফ্যাক্ট। আর এগুতে পারে না। মনে হয় আরো পড়তে হবে। তারপরেই ফ্যাব্রিকেশন হবে। লোমেলার চোখে আবারও নিজের লেখা বইয়ের স্বপ্নটা জেগে ওঠে - "জিরো পয়েন্ট টু সিক্স নাইন মিলিয়ন - ফ্যাক্ট অর পলিটিক্স?" লোমেলারা প্রমাণ করে দেবে ওটা নির্ঘাৎ পলিটিক্স। হয়তো সময় লাগবে খানিক। একাত্তরকে রি-কাউন্ট, রি-ডিফাইন করে ইতিহাসের পাতাগুলো নতুনভাবে জ্বলজ্বল করবে। আপাতত: জি-মেইলে কম্পোজ ক্লিক করে লোমেলা - "ডিয়ার মিস শর্মীলা বোস - - -"।

.
.
.

0 মন্তব্য::

  © Blogger templates The Professional Template by Ourblogtemplates.com 2008

Back to TOP